বরিশাল ০৯:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজেদের পাতা ফাঁদে বিএনপি, মিথ্যাচার চলছেই

নাঈমুর রহমান ছরোয়ার
  • আপডেট সময় : ১০:৫৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪ ৩৭০ বার পড়া হয়েছে

নিজেদের পাতা ফাঁদ থেকে বের হতেই পারছে না বিএনপি। নতুন সরকার শপথের দিন আবারও ব্যাপক মিথ্যাচারে নেমেছেন দলটির নেতারা। তালা ভেঙে অফিসে ঢুকে বিএনপির নেতারা নতুন এক নাটকের অবতারণা শুরু করেছেন। ৭৪ দিন পরে পার্টি অফিস খুলে প্রবেশ করতে পারলেও তারা কেন আরও আগে প্রবেশের প্রচেষ্টা করলেন না, এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মূলত তারা ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডব ও পুলিশ পিটিয়ে হত্যার পর আত্মগোপনে চলে যান। তাদের বিদেশি প্রভুদের সহমর্মিতা পেতেই অফিসের তালা ভাঙার নাটক করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বলছে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপান, কানাডাসহ বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশগুলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজে ফোন করে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট বার্তা পাঠিয়ে পঞ্চমবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সেখানে বিএনপি সেই ‘তালগাছ আমার’ পুরোনো দাবি নিয়েই বসে আছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান অভিযোগ করেছেন, ভুয়া নির্বাচনে সরকার সংসদকে কুক্ষিগত করেছে।

তার দাবি, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ সিটে কে বিজয়ী, কে বিজেতা, কে জয়ী, কে পরাজিত সেগুলো নির্বাচনে নির্ধারিত হয়নি। এগুলো সব নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে কে কত ভোট পাবে, কে কত শতাংশ ভোট পাবে এবং কোন সিট থেকে কে নির্বাচিত হবে।

বিএনপির এই প্রবীণ নেতার দাবি যে একেবারেই ভিত্তিহীন সেই প্রমাণ মিলেছে ভোটের মাঠেই। দেশজুড়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ব্যাপক সহিংসতা আগুন সন্ত্রাস, নিরীহ মানুষ ও পুলিশ সদস্য হত্যাসহ নানা ধরনের নাশকতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। তবে এবার শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ছিল একাট্টা। আর সরকারের তরফ থেকে তারা পেয়েছে শতভাগ সহযোগিতা।

২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট পেয়েছে ২২৪ আসন। অর্থাৎ ৭৫ শতাংশের কিছু বেশি আসন পেয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। আর ২৪ শতাংশের বেশি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি ও কল্যাণ পার্টির প্রার্থীরা।

সুষ্ঠু ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ৬২ জন নৌকার প্রার্থীর হেরে গেছেন। এদের মধ্যে রয়েছে মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের প্রভাবশালী নেতারাও। নির্বাচনে কোথাও কোনো অনিয়মের খবর আসার সঙ্গে ভোট স্থগিত থেকে শুরু করে জরিমানা, কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা ভোটের দিন ঘটেছে। সামান্য অনিয়মের কারণে নৌকার প্রার্থীর সমস্ত ভোট বাদ দিয়ে একটি আসনে গণনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রকম নজির কোথাও কখনো হয়নি যে, ক্ষমতাসীন দলের প্রতীকের ভোট বাদ দিয়ে গণনা করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নাশকতার উন্মাদনায় মেতে ওঠে বিএনপি-জামায়াত জোট। ভোটের লড়াইয়ে না এসে নাশকতা চালানো বিএনপির পুরোনো অভ্যাস। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে স্বাধীন বাংলাদেশে নজিরবিহীন ভয়াবহ এক নাশকতায় মাতে বিএনপি-জামায়াত জোট। সে সময় দেড় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটানো হয়।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের নামে রাজধানীতে ভয়াবহ নাশকতা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। প্রকাশ্যে পুলিশ সদস্য পিটিয়ে হত্যার ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ঘটনার দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়ে গোটা জাতি। সেদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবন, পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় নারকীয় সহিংসতা। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসতে থাকে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস রূপ বাড়তে থাকে।

জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের অভিযানের মুখে নিজেদের অফিস তালা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা। ভোট শেষে নতুন সরকারের শপথের দিন রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে তালা ভেঙে অফিস খোলা হয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এখন যদি তালা ভেঙে অফিসে প্রবেশ করা যায়, তাহলে এই ৭৫ দিন তারা কোথায় ছিল?

২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিভিন্ন নাশকতা চালাতে থাকে। চলন্ত ট্রেনে আগন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেললাইন কেটে দুর্ঘটনা ঘটানোর মতো জঙ্গি উন্মত্ততায় মেতে ওঠে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী-ক্যাডাররা। ভোট বানচাল করতে প্রায় ৩০০ গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটানো হয়। পুলিশের হাতে আটক হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা এসব নাশকতার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিদেশি পর্যবেক্ষকরা অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। সারা পৃথিবী থেকে ৩০০-এর বেশি বিদেশি পর্যবেক্ষক আসেন ৭ জানুয়ারির ভোট দেখতে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের প্রশংসা করে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে পাঁচটি দল থেকে সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধি এসেছে। ব্যাপকহারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। শুধু মাত্র অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

কিন্তু তারপরও বিএনপি নেতারা নাশকতার দায়ভার ঢাকাতে এখনো প্রচার চালাচ্ছেন যে, ভোট সুষ্ঠু হয়নি। বিএনপি নামক দলটির জন্মলগ্ন থেকেই জড়িয়ে আছে মিথ্যাচার। তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা হোক কিংবা পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস তুলে ধরাম হোক-সর্বক্ষেত্রেই মিথ্যাচার চালিয়েছে বিএনপি। যে কারণেই দলটি জনবিচ্ছিন্ন হতে হতে এখন একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। আর এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব কাঠামো এখন আর বাংলাদেশে নেই। বিদেশের মাটিতে বসে দণ্ডপ্রাপ্ত এক অপরাধীর ইশারায় চলছে এই দল, যাদের প্রধান অস্ত্র মিথ্যাচার, সন্ত্রাস ও নাশকতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিজেদের পাতা ফাঁদে বিএনপি, মিথ্যাচার চলছেই

আপডেট সময় : ১০:৫৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪

নিজেদের পাতা ফাঁদ থেকে বের হতেই পারছে না বিএনপি। নতুন সরকার শপথের দিন আবারও ব্যাপক মিথ্যাচারে নেমেছেন দলটির নেতারা। তালা ভেঙে অফিসে ঢুকে বিএনপির নেতারা নতুন এক নাটকের অবতারণা শুরু করেছেন। ৭৪ দিন পরে পার্টি অফিস খুলে প্রবেশ করতে পারলেও তারা কেন আরও আগে প্রবেশের প্রচেষ্টা করলেন না, এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মূলত তারা ২৮ অক্টোবরের তাণ্ডব ও পুলিশ পিটিয়ে হত্যার পর আত্মগোপনে চলে যান। তাদের বিদেশি প্রভুদের সহমর্মিতা পেতেই অফিসের তালা ভাঙার নাটক করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বলছে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপান, কানাডাসহ বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশগুলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজে ফোন করে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট বার্তা পাঠিয়ে পঞ্চমবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সেখানে বিএনপি সেই ‘তালগাছ আমার’ পুরোনো দাবি নিয়েই বসে আছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান অভিযোগ করেছেন, ভুয়া নির্বাচনে সরকার সংসদকে কুক্ষিগত করেছে।

তার দাবি, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ সিটে কে বিজয়ী, কে বিজেতা, কে জয়ী, কে পরাজিত সেগুলো নির্বাচনে নির্ধারিত হয়নি। এগুলো সব নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে কে কত ভোট পাবে, কে কত শতাংশ ভোট পাবে এবং কোন সিট থেকে কে নির্বাচিত হবে।

বিএনপির এই প্রবীণ নেতার দাবি যে একেবারেই ভিত্তিহীন সেই প্রমাণ মিলেছে ভোটের মাঠেই। দেশজুড়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ব্যাপক সহিংসতা আগুন সন্ত্রাস, নিরীহ মানুষ ও পুলিশ সদস্য হত্যাসহ নানা ধরনের নাশকতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। তবে এবার শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ছিল একাট্টা। আর সরকারের তরফ থেকে তারা পেয়েছে শতভাগ সহযোগিতা।

২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট পেয়েছে ২২৪ আসন। অর্থাৎ ৭৫ শতাংশের কিছু বেশি আসন পেয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। আর ২৪ শতাংশের বেশি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি ও কল্যাণ পার্টির প্রার্থীরা।

সুষ্ঠু ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ৬২ জন নৌকার প্রার্থীর হেরে গেছেন। এদের মধ্যে রয়েছে মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের প্রভাবশালী নেতারাও। নির্বাচনে কোথাও কোনো অনিয়মের খবর আসার সঙ্গে ভোট স্থগিত থেকে শুরু করে জরিমানা, কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা ভোটের দিন ঘটেছে। সামান্য অনিয়মের কারণে নৌকার প্রার্থীর সমস্ত ভোট বাদ দিয়ে একটি আসনে গণনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রকম নজির কোথাও কখনো হয়নি যে, ক্ষমতাসীন দলের প্রতীকের ভোট বাদ দিয়ে গণনা করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নাশকতার উন্মাদনায় মেতে ওঠে বিএনপি-জামায়াত জোট। ভোটের লড়াইয়ে না এসে নাশকতা চালানো বিএনপির পুরোনো অভ্যাস। ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে স্বাধীন বাংলাদেশে নজিরবিহীন ভয়াবহ এক নাশকতায় মাতে বিএনপি-জামায়াত জোট। সে সময় দেড় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটানো হয়।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের নামে রাজধানীতে ভয়াবহ নাশকতা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। প্রকাশ্যে পুলিশ সদস্য পিটিয়ে হত্যার ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ঘটনার দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়ে গোটা জাতি। সেদিন প্রধান বিচারপতির বাসভবন, পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় নারকীয় সহিংসতা। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসতে থাকে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস রূপ বাড়তে থাকে।

জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের অভিযানের মুখে নিজেদের অফিস তালা দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান বিএনপির নেতাকর্মীরা। ভোট শেষে নতুন সরকারের শপথের দিন রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে তালা ভেঙে অফিস খোলা হয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এখন যদি তালা ভেঙে অফিসে প্রবেশ করা যায়, তাহলে এই ৭৫ দিন তারা কোথায় ছিল?

২৮ অক্টোবরের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিভিন্ন নাশকতা চালাতে থাকে। চলন্ত ট্রেনে আগন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেললাইন কেটে দুর্ঘটনা ঘটানোর মতো জঙ্গি উন্মত্ততায় মেতে ওঠে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী-ক্যাডাররা। ভোট বানচাল করতে প্রায় ৩০০ গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটানো হয়। পুলিশের হাতে আটক হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা এসব নাশকতার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

এমন প্রতিকূলতার মধ্যেও সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিদেশি পর্যবেক্ষকরা অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। সারা পৃথিবী থেকে ৩০০-এর বেশি বিদেশি পর্যবেক্ষক আসেন ৭ জানুয়ারির ভোট দেখতে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের প্রশংসা করে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে পাঁচটি দল থেকে সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধি এসেছে। ব্যাপকহারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। শুধু মাত্র অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

কিন্তু তারপরও বিএনপি নেতারা নাশকতার দায়ভার ঢাকাতে এখনো প্রচার চালাচ্ছেন যে, ভোট সুষ্ঠু হয়নি। বিএনপি নামক দলটির জন্মলগ্ন থেকেই জড়িয়ে আছে মিথ্যাচার। তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা হোক কিংবা পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস তুলে ধরাম হোক-সর্বক্ষেত্রেই মিথ্যাচার চালিয়েছে বিএনপি। যে কারণেই দলটি জনবিচ্ছিন্ন হতে হতে এখন একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। আর এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব কাঠামো এখন আর বাংলাদেশে নেই। বিদেশের মাটিতে বসে দণ্ডপ্রাপ্ত এক অপরাধীর ইশারায় চলছে এই দল, যাদের প্রধান অস্ত্র মিথ্যাচার, সন্ত্রাস ও নাশকতা।