বরিশাল ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গৌরনদীতে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলা ও বাইকে অগ্নিসংযোগ, ২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ২ বরিশালে পুলিশ বক্সে হামলা অজ্ঞাত ৩০০ জনের নামে মামলা মাদারীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলকারীদের সঙ্গে পুলিশ-ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১ আক্রমণ না করার শর্তে ববি ক্যাম্পাস ছেড়েছে পুলিশ-বিজিবি উজিরপুরে কোটা বিরোধী আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ভোলায় কোটা আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা বাবা মুক্তিযোদ্ধা না তবু ও কোটায় চাকরি তিন ছেলের যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান’র মৃত্যুবার্ষিকীতে গৌরনদীতে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত ভোলায় হাসপাতালে লাশ রেখে পালালেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন, স্বজনদের দাবি হত্যা নলছিটিতে চাচাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় ভাতিজা গ্রেপ্তার

রাজাকারের পুত্রবধূকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় তোলপাড়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক— দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের রাজাকার পরিবারের সদস্য সাতক্ষীরার লায়লা পারভীন সেঁজুতিকে মনোনয়ন দেয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও তার শশুরের বিরুদ্ধে রাজাকার হিসেবে দালিলিক প্রমান রয়েছে। সেঁজুতির বেশ কিছু কর্মকান্ডও ছিল বিতর্কিত। তাকে মনোনয়ন দেয়ায় পুরো সাতক্ষীরা জুড়েই এক প্রকার বিরুপ আলোচনা শুরু হয়েছে।

এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মনোনীতি হওয়ায় রাজাকার নেয়ামত উদ্দিনের মুক্তারের বাড়িতে সংবর্ধণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতা ও সচেতন মহল ওই অনুষ্ঠানটি বর্জণ করেছেন। তারা বলছেন একজন রাজাকারের পুত্রবধুকে নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেওয়া দু:খজনক ও অপ্রত্যাশিত।
জানা যায়, সাতক্ষীরার লায়লা পারভীন সেঁজুতি ২০১৭ সালে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রবেশ করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ তাকে বহিষ্কারের প্রস্তাব পাঠায় কেন্দ্রের কাছে। পরে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তার বাবা স ম আলাউদ্দিন ছিলেন সাতক্ষীরার বীর মুক্তিযোদ্ধা। যদিও তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের হয়ে গণবাহিনীর সদস্য ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন এবং দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন। তবে তার শ্বশুর নেয়ামত উদ্দিন মুক্তার ছিলেন শান্তি কমিটির সদস্য। এজন্য ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি দালাল আইনে তিনি গ্রেপ্তার হন। এ এস এম সামছুল আরেফিন সম্পাদনার বই ‘রাজাকার ও দালাল অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের নামের তালিকা’ শশুর নিয়ামত উদ্দিন মুক্তারের গ্রেফতারের বিষয়টি স্পস্ট উল্লেখ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেঁজুতির শ্বশুর ছাড়াও তার ভাশুর আজম ছিলেন বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দলের আহ্বায়ক। ননদ ফেরদৌসি আরা লুসি মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও অন্য ননদের স্বামী সৈয়দ ইফতেখার আলী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ও বর্তমান কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে তার মনোনয়ন নিয়ে পুরো জেলাতেই এক প্রকার তোলপাড় চলছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষও শুরু হয়েছে। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে তাকে ঘিরে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে মনোনয়ন নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, তার শ্বশুরবাড়ির দিকের পরিবারের বেশিরভাগই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র বলেন, যতটুকু শুনেছি তার শ্বশুর মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটিতে ছিলেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেঁজুতি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না, যারা এসব তথ্য ছড়াচ্ছে, তারাই প্রমাণ করুক।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

রাজাকারের পুত্রবধূকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় তোলপাড়

আপডেট সময় : ০১:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক— দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের রাজাকার পরিবারের সদস্য সাতক্ষীরার লায়লা পারভীন সেঁজুতিকে মনোনয়ন দেয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও তার শশুরের বিরুদ্ধে রাজাকার হিসেবে দালিলিক প্রমান রয়েছে। সেঁজুতির বেশ কিছু কর্মকান্ডও ছিল বিতর্কিত। তাকে মনোনয়ন দেয়ায় পুরো সাতক্ষীরা জুড়েই এক প্রকার বিরুপ আলোচনা শুরু হয়েছে।

এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মনোনীতি হওয়ায় রাজাকার নেয়ামত উদ্দিনের মুক্তারের বাড়িতে সংবর্ধণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতা ও সচেতন মহল ওই অনুষ্ঠানটি বর্জণ করেছেন। তারা বলছেন একজন রাজাকারের পুত্রবধুকে নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দেওয়া দু:খজনক ও অপ্রত্যাশিত।
জানা যায়, সাতক্ষীরার লায়লা পারভীন সেঁজুতি ২০১৭ সালে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রবেশ করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ তাকে বহিষ্কারের প্রস্তাব পাঠায় কেন্দ্রের কাছে। পরে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তার বাবা স ম আলাউদ্দিন ছিলেন সাতক্ষীরার বীর মুক্তিযোদ্ধা। যদিও তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের হয়ে গণবাহিনীর সদস্য ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন এবং দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন। তবে তার শ্বশুর নেয়ামত উদ্দিন মুক্তার ছিলেন শান্তি কমিটির সদস্য। এজন্য ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি দালাল আইনে তিনি গ্রেপ্তার হন। এ এস এম সামছুল আরেফিন সম্পাদনার বই ‘রাজাকার ও দালাল অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের নামের তালিকা’ শশুর নিয়ামত উদ্দিন মুক্তারের গ্রেফতারের বিষয়টি স্পস্ট উল্লেখ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেঁজুতির শ্বশুর ছাড়াও তার ভাশুর আজম ছিলেন বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দলের আহ্বায়ক। ননদ ফেরদৌসি আরা লুসি মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও অন্য ননদের স্বামী সৈয়দ ইফতেখার আলী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ও বর্তমান কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে তার মনোনয়ন নিয়ে পুরো জেলাতেই এক প্রকার তোলপাড় চলছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষও শুরু হয়েছে। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে তাকে ঘিরে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে মনোনয়ন নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, তার শ্বশুরবাড়ির দিকের পরিবারের বেশিরভাগই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র বলেন, যতটুকু শুনেছি তার শ্বশুর মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটিতে ছিলেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সেঁজুতি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না, যারা এসব তথ্য ছড়াচ্ছে, তারাই প্রমাণ করুক।