সুর্যমনি মেলার র্যাফেল ড্র নামে উজিরপুরে চলছে অবৈধ লটারি জুয়া, নিরব প্রশাসন
- আপডেট সময় : ০৮:৩০:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৪৭৬ বার পড়া হয়েছে
উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের বানারীপাড়ায় মাসব্যাপী সুর্যমনি মেলার আড়ালে চলছে সর্বনাশা লটারির জুয়া। স্বর্নের চেইন, কানের দুল,গাভী ও মোটরসাইকেল সহ আকর্ষণীয় বিভিন্ন পুরস্কার ঘোষণা করায় প্রতিদিন শহর ছাড়াও গ্রামগঞ্জে লটারির টিকেট বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রকাশ্যে এসব অবৈধ লটারির টিকেট বিক্রি ও লটারির কার্যক্রম চললেও রহস্যজনকভাবে নিরব ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারী জেলার বানারীপাড়ায় ২২৯ তম সুর্যমনি মেলা কর্তৃপক্ষের আয়োজনে মাসব্যাপী এই মেলা শুরু হয়।
মেলা উদ্বোধনের পরদিন থেকেই শুরু হয় সর্বনাশা লটারির টিকেট বিক্রি। মেলার গেট ও ইজিবাইক ভাড়া করে উচ্চশব্দে চটকদার বিজ্ঞাপনে নানা প্রলোভন দিয়ে ও শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চেয়ার টেবিল বসিয়ে মেলার আয়োজক কমিটির লোকজন ২০ টাকা মূল্যের লটারির টিকেট বিক্রি করে আসছেন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
এছাড়াও পার্শবর্তী উজিরপুর সহ বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে শতাধিক অটোরিকশা যোগে ঘুরে ঘুরে উচ্চশব্দে মাইকে চটকদার প্রলোভন দিয়ে লটারির টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে।যেখানে সমগ্র দেশে এসএসসি পরিক্ষা চলমান সেখানে পরিক্ষা চলাকালীন সময়তে চলা ১৪৪ ধারাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় সারাদিন টিকেট বিক্রি শেষে রাত সাড়ে ১০টায় মেলা চত্বরে লটারি ড্র অনুষ্ঠিত করছে প্রতিদিন।
এমনকি প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে আসাদু কিছু পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে জেলা জুড়ে সর্বনাশা লটারি টিকিট বিক্রি চলছে। আবার সেই লটারির ড্র প্রচার করা হচ্ছে টিভিতেও।
স্বর্নের চেইন, কানের দুল,গাভী, মোটরসাইকেল, ফ্রিজসহ আকর্ষণীয় পুরস্কার ঘোষণা করায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন টিকেট কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। রিকশা চালক ছাড়াও দিনমজুর শ্রেণির লোকজন যা আয় করছেন সেই টাকায় বাড়ির বাজার না করে লটারির টিকেট কিনে বাড়ি ফিরছেন। আবার অনেকেই মোটরসাইকেল পুরস্কার পাওয়ার আশায় প্রতিদিন অসংখ্য টিকেট কিনেও মোটরসাইকেল পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে সচেতন লোকেরা বলেন, গত বছর লটারির টিকেট কিনেছি তবে তা ড্র না করেই লটারি কর্তৃপক্ষ পালিয়েছিলো, এ বছর আবার এসেছে গ্রামগঞ্জে। আইন অমান্য করে টিকেট বিক্রির ফলে গরীব মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। চুরি সহ অন্যায় অপরাধ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সামনে রমজান মাস এইসব কাজ ঠিক না। এ বিষয়ে জানতে মেলা পরিচালনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী বলেন, আকর্ষণীয় পুরস্কারের ফাঁদে ফেলে লটারির নামে জুয়া চলছে বরিশাল জুরে অথচ বরিশালের প্রশাসন ও সুশীল সমাজ নিরব। সুর্যমনি কর্তৃপক্ষর আয়োজনে চলা মেলায় লটারি জুয়া চালানোর দায় জেলা প্রশাসন এড়াতে পারেন না। এভাবে প্রতিদিন লটারি চলতে থাকলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়বে।
একাধিক বার লটারি বিক্রি বন্ধ হলেও রহস্য জনক কারনে থেমে নেই অবৈধ লটারি বিক্রি। বরিশালের উজিরপুর উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে এসব লটারি বিক্রি।
এ বিষয়ে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বসে যারা অবৈধ লটারি বিক্রি করে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো আশা করছি অচিরেই এসব অবৈধ লটারি বিক্রি বন্ধ হবে।
(কারা লটারি জুয়ার সাথে জরিত? ক্ষমতার উৎস কোথায়? বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন আগামী পর্বে।)