উজিরপুরে শুরু হলো আড়াইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী কাটাগাছ তলার বৈশাখী মেলা
- আপডেট সময় : ০৬:০৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ৪৪ বার পড়া হয়েছে
মোঃ জুনায়েদ খান সিয়ামঃ আসে উৎসব-জাগে উল্লাস, সাজে নবপল্লবে বনবিথী। নীল গগনে সাদা আর কালো মেঘের খেলা নিরবধি। প্রলয় হুংকার কত ভয়ংকর-ঝড়ে বৃষ্টি আনে তুষ্টি। গাঁয়ের মাঠে প্রাণের মেলায় সাজিয়াছে মন্ডা-মিষ্টি।’ নবরূপে সজ্জিত প্রকৃতির মাঝে ঘন কালো মেঘের গর্জন, সঙ্গে রং-বেরঙের উৎসব। এমন চিরায়ত রূপ নিয়ে বাংলায় আসে বৈশাখ, শুরু হয় নতুন বছর। আর নববর্ষ বরণ উৎসবকে আকর্ষণীয় করে তোলে বৈশাখী মেলা। ১৫৮৬ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি, হিজরি, চন্দ্র ও সৌর সনকে ভিত্তি করে বঙ্গাব্দ প্রবর্তিত হওয়ার পর মোঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে বাংলা নববর্ষ পালন শুরু হয়। নতুন বছরের প্রথম দিন ও মাস বৈশাখকে বরণ করতে তখন মেলাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। কালেক্রমে সেটির নাম হয় ‘বৈশাখী মেলা’।খেলনা টমটমের টুংটাং শব্দ, তালপাতার বাঁশির পু-পু-পু সুর, নাগরদোলায় দোল খাওয়া শিশু-কিশোরদের কলরবের সঙ্গে পুতুল নাচের আসর থেকে মাইকে ভেসে আসা লোকজ গান আর ঢাক ঢোলের শব্দ নিয়েই গ্রাম-বাংলায় বসে বৈশাখী মেলা। মেলায় থাকে লোকজ খাদ্যদ্রব্য মুড়ি-মুড়কি, জিলাপি, রসগোল্লা, খই-চিড়া বাতাসা গাঁয়ের বধূদের জন্য কাচের চুড়ি, পুঁতির মালা, রঙিন ফিতা, প্রসাধনীর সারি সারি দোকান। কারুপণ্য, কুটির শিল্প, হস্তশিল্পসহ নানা পণ্য ছাড়াও মাটির তৈরি পুতুল, কাঠের গাড়ি, বাঁশের কুলা-চালুনসহ নানা ধরণের শিশু-কিশোর খেলনা সামগ্রীর পসরা সাজায় দোকানিরা। নানা বিনোদনে মুখরিত থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। আর মেলার এ দিনটির জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষায় থাকে গাঁয়ের বধূ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষ। মেলায় যেতে যেতে গাঁয়ের মেঠো পথে শিশু-কিশোরদের দুরন্তপনায় ছুটে চলা ও পাগলা হাওয়ায় দোল খাওয়া সবুজ ধানের ক্ষেতে ভাই-বোনের লুকোচুরি খেলা আনন্দটা আরও বাড়িয়ে দেয়। আর মেলা থেকে ফেরার পথে তালপাতার বাঁশি, খেলনা টমটম গাড়ি ও কিশোরীর হাতে কাচের চুরির ঝনঝন আওয়াজে মুখরিত থাকে পথ-প্রান্তর। বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার পৌরসদরের ৫ নং ওয়ার্ডের পুরান বাজারে প্রতিবছরই বসে এমন এক ঐতিহ্যবাহী মেলা। শত শত বছর ধরে চলে আসা মেলাটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। বৈশাখ মাসের তিন তারিখ থেকে শুরু হয়ে চলবে ৫ তারিখ পর্যন্ত।দুই থেকে আড়াইশ বছর ধরেই এ মেলা চলে আসছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।