বরিশাল ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উজিরপুরে সেনাবাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৬ রাজাপুরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ডিম মাংসের পর নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে পাঙাসও উজিরপুরে জেলেদের মাঝে চাল বিতরন শুরু মঠবাড়িয়ায় হার পাওয়ার প্রকল্পের ফ্রীল্যান্সিং ২৫ প্রশিক্ষনার্থী পেল ল্যাপটপ উজিরপুরে সুদের টাকার বিনিময়ে জমি লিখে নিয়ে বৃদ্ধাকে ঘড় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ রাজাপুর অফিসার্স কল্যান ক্লাবের পক্ষ থেকে ওসি আতাউরকে বিদায়ী সংবর্ধণা ঝালকাঠিতে আদালতের নথিপত্র জালিয়াতির দায়ে আক্কাস সিকদারকে শোকজ টি–টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা মাহমুদউল্লাহর উজিরপুরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৩ টি ল্যাপটপ চুরি

উপকূলে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ইলিশ

বরিশাল সময় নিউজ রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৬:০৪:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬ বার পড়া হয়েছে

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: অবরোধের ও বৈরী আবহাওয়ার সংকট কাটিয়ে সমুদ্র ও নদীতে গত দুই -তিন ধরে বেড়েছে ইলিশের আহরোন। চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় ইলিশের বাড়িখ্যাত বরগুনার তালতলী উপকূলের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাগালের বাইরে। এর কারন হিসেবে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন ক্রেতারা। তবে ইলিশের বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে শীগ্রই জেলাজুড়ে অভিযান শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বরগুনা সদর, তালতলীর ফকিরহাট বাজারে ইলিশ কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম। বিগত বছরগুলোতে এই সময়টায় তুলনামূলকভাবে ইলিশের দামএকটু সস্তা থাকে, কিন্তু এবছর দাম কম থাকার বদলে উল্টো আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার স্থানীয় বাজারগুলোতে কয়েকদিন আগেও ৫৩ বাজারের এলসি( ৭০০থেকে ৯০০গ্রামের ওজনের) আকারে ইলিশ মণ ৬২ হাজার টাকা।এ ছাড়া কেজি আকারের মাসের মণ ৬৮ হাজার টাকা,এক হাজার ২০০ গ্রাম ওজনের মাছ ৭৫ হাজার টাকা, ভ্যালকা (৪০০থেকে৬০০গ্রাম) আকারের মাছ ৫০ হাজার টাকা, ২৭ হাজার টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে প্রত্যেক ক্যাটাগরি সাইজের ইলিশের দাম মনপ্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে ভ্যালকা ক্যাটাগরির জাটকা ইলিশই ২৭ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরগুনা উপকূলের সমুদ্র ও নদী থেকে আহরিত এসব ইলিশ একটি সিন্ডিকেট চক্র উচ্চ মুনাফা লাভের আশায় স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি না রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেয়। বরগুনা সদর ও তালতলী উপজেলার জেলে পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে এখানকার বেশিরভাগ জেলেরাই হতদরিদ্র। ইলিশের মৌসুমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে একটু ভালো থাকতে পারলেও বছরের বাকি সময়টা বিভিন্ন মৎস্য আড়ৎ ও মহাজনদের কাছ থেকে সিজন সময় মাছ দেওয়ার শর্তে দাদন নিয়ে সংসার চালাতে হয় তাদের। দাদনের টাকা পরিশোধ করতেই আড়তের মহাজনদের কাছেই আহরিত মাছ বিক্রি করতে হয় তাদের। পরে স্থানীয় আড়ৎদার মাছগুলোকে নিলাম বা ডাকে তুললে এক শ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্র কিনি নিয়ে উচ্চ লাভে রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরঅঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে খুব কম পরিমানে ইলিশ পাওয়া যায়। বরগুনা পৌর মাছ বাজার ও তালতলী মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ১৫০০ টাকা থেকে ১৭০০টাকা, ১কেজি বা তার উপরের প্রতিকেজি ওজন অনুসারে ১৮০০ টাকা ২২৫০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের বাড়িখ্যাত বরগুনায় এত চড়া দাম হওয়ায় নাভিশ্বাস ফেলছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। ইলিশ কিনতে এসে ফিরে যাওয়া বাদল বলেন,ইলিশের বদলে রুই মাছ কিনে নিয়ে গেলাম সন্তানদের নিয়ে একসাথে এক বেলা খাওয়া যাবে। যা দাম তাতে ইলিশ আমাদের নয়,ধনীদের মাছ হয়ে যাচ্ছে। খুচরা বাজারে ইলিশ কিনতে আসা সজল দত্ত সাধ্যের মধ্যে দুটি ঝাটকা ইলিশ কিনে যাওয়ার সময় প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে। এসময় তিনি বলেন, কৃষি জমিই আমার একমাত্র আয়ের উৎস। ইলিশের যা দাম আর এভাবে যদি থাকে তাতে আমাদের মত শ্রেণির মানুষ বছরে দুই-তিন ইলিশ মাছ কিনে খেতে পারবে। আরো যদি দাম বাড়ে তাহলে ইলিশ মাছ আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। বরগুনা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা শাখার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস কালবেলাকে বলেন, আড়ৎগুলোতে চালান নিয়ে কারসাজির অভিযোগে সঠিকভাবে চালান লেখার জন্য কয়েকদিন আগেও অভিযান চালিয়ে তাদের মুচলেকা নিয়ে এসেছি। ইলিশের দামের বিষয়টি নিয়েও আমরা শীগ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

উপকূলে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ইলিশ

আপডেট সময় : ০৬:০৪:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: অবরোধের ও বৈরী আবহাওয়ার সংকট কাটিয়ে সমুদ্র ও নদীতে গত দুই -তিন ধরে বেড়েছে ইলিশের আহরোন। চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় ইলিশের বাড়িখ্যাত বরগুনার তালতলী উপকূলের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাগালের বাইরে। এর কারন হিসেবে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন ক্রেতারা। তবে ইলিশের বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে শীগ্রই জেলাজুড়ে অভিযান শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বরগুনা সদর, তালতলীর ফকিরহাট বাজারে ইলিশ কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম। বিগত বছরগুলোতে এই সময়টায় তুলনামূলকভাবে ইলিশের দামএকটু সস্তা থাকে, কিন্তু এবছর দাম কম থাকার বদলে উল্টো আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার স্থানীয় বাজারগুলোতে কয়েকদিন আগেও ৫৩ বাজারের এলসি( ৭০০থেকে ৯০০গ্রামের ওজনের) আকারে ইলিশ মণ ৬২ হাজার টাকা।এ ছাড়া কেজি আকারের মাসের মণ ৬৮ হাজার টাকা,এক হাজার ২০০ গ্রাম ওজনের মাছ ৭৫ হাজার টাকা, ভ্যালকা (৪০০থেকে৬০০গ্রাম) আকারের মাছ ৫০ হাজার টাকা, ২৭ হাজার টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে প্রত্যেক ক্যাটাগরি সাইজের ইলিশের দাম মনপ্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে ভ্যালকা ক্যাটাগরির জাটকা ইলিশই ২৭ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরগুনা উপকূলের সমুদ্র ও নদী থেকে আহরিত এসব ইলিশ একটি সিন্ডিকেট চক্র উচ্চ মুনাফা লাভের আশায় স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি না রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেয়। বরগুনা সদর ও তালতলী উপজেলার জেলে পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে এখানকার বেশিরভাগ জেলেরাই হতদরিদ্র। ইলিশের মৌসুমে স্ত্রী সন্তান নিয়ে একটু ভালো থাকতে পারলেও বছরের বাকি সময়টা বিভিন্ন মৎস্য আড়ৎ ও মহাজনদের কাছ থেকে সিজন সময় মাছ দেওয়ার শর্তে দাদন নিয়ে সংসার চালাতে হয় তাদের। দাদনের টাকা পরিশোধ করতেই আড়তের মহাজনদের কাছেই আহরিত মাছ বিক্রি করতে হয় তাদের। পরে স্থানীয় আড়ৎদার মাছগুলোকে নিলাম বা ডাকে তুললে এক শ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্র কিনি নিয়ে উচ্চ লাভে রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরঅঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে খুব কম পরিমানে ইলিশ পাওয়া যায়। বরগুনা পৌর মাছ বাজার ও তালতলী মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতিকেজি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতিকেজি ইলিশ ১৫০০ টাকা থেকে ১৭০০টাকা, ১কেজি বা তার উপরের প্রতিকেজি ওজন অনুসারে ১৮০০ টাকা ২২৫০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের বাড়িখ্যাত বরগুনায় এত চড়া দাম হওয়ায় নাভিশ্বাস ফেলছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। ইলিশ কিনতে এসে ফিরে যাওয়া বাদল বলেন,ইলিশের বদলে রুই মাছ কিনে নিয়ে গেলাম সন্তানদের নিয়ে একসাথে এক বেলা খাওয়া যাবে। যা দাম তাতে ইলিশ আমাদের নয়,ধনীদের মাছ হয়ে যাচ্ছে। খুচরা বাজারে ইলিশ কিনতে আসা সজল দত্ত সাধ্যের মধ্যে দুটি ঝাটকা ইলিশ কিনে যাওয়ার সময় প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে। এসময় তিনি বলেন, কৃষি জমিই আমার একমাত্র আয়ের উৎস। ইলিশের যা দাম আর এভাবে যদি থাকে তাতে আমাদের মত শ্রেণির মানুষ বছরে দুই-তিন ইলিশ মাছ কিনে খেতে পারবে। আরো যদি দাম বাড়ে তাহলে ইলিশ মাছ আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। বরগুনা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা শাখার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাস কালবেলাকে বলেন, আড়ৎগুলোতে চালান নিয়ে কারসাজির অভিযোগে সঠিকভাবে চালান লেখার জন্য কয়েকদিন আগেও অভিযান চালিয়ে তাদের মুচলেকা নিয়ে এসেছি। ইলিশের দামের বিষয়টি নিয়েও আমরা শীগ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।