সংবাদ শিরোনাম ::
ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে ভাসমান আমড়ার বাজার
বরিশাল সময় নিউজ রিপোর্ট
- আপডেট সময় : ০৪:১৯:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪ ২৩ বার পড়া হয়েছে
ঝালকাঠি থেকে নবীন মাহমুদ⇒
ঝালকাঠির এর আগে পেয়ারার সুখ্যাতি ছিল এবার যোগ হলো আমাড়ার নাম।আমড়ায় আছে পর্যাপ্ত পরিমান ভিটামিন সি,এ, ক্যলসিয়াম,ফসফরাস অনেক পুষ্টিগুন।আশ থাকায় আমড়া হজমে সহায়তা করে এছাড়াও রয়েছে আমড়া খাওয়ায় নানা উপকারিতা। দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবে ঝালকাঠির ভিমরুলী ভাসমান হাটে পেয়ারার দরদামে ধস নেমেছিল। সেই অস্থিরতা কাটিয়ে মৌসুমের শুরুতেই জমজমাট হয়ে উঠেছে আমড়ার হাট। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে জমজমাট থাকে ভিমরুলীসহ আশপাশের বাজার। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি মৌসুমে ৩০ কোটি টাকারও বেশি আমড়া বিক্রি হবে। যা গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে। শুধু ভিমরুলীই নয়, সদর উপজেলার শতদশকাঠি, ডুমুরিয়া, আতাসহ আশপাশের কমপক্ষে দশটি গ্রামে আমড়ার ভাসমান বাজারের বিস্তার ঘটেছে। সাধারণত ভাদ্র মাসের শুরুতেই জমতে থাকে আমড়ার বাজার। চলে টানা দুই মাস। ভাসমান আমরা বাজার সম্পর্কে স্থানীয় ও চাষিদের সাথে কথা বল্লে তারা জানান, “এ বছর পেয়ারা বিক্রি করে কোনো লাভই তুলতে পারিনি। তারচেয়ে বর্তমানে আমড়ার বাজার সন্তোষজনক। প্রতিমণ আমড়া বিক্রি করছি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা দরে। এই দাম সামনে আরো বাড়তে পারে। পেয়ারায় ফলন ভালো পাচ্ছি না। পাতায় ছত্রাক ধরেছে। ফল সাইজে ছোট হয়ে গেছে। এজন্য পেয়ারা গাছ কেটে আমড়া চাষ করেছি বছর পাঁচেক হলো। ইতোমধ্যে ফলন পেতে শুরু করেছি।” চাষীরা জানান, পেয়ারার চেয়ে আমড়ার ভালো দিক হলো– এই ফল দ্রুত পঁচে যায় না। ২০-২৫ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। যে কারণে পঁচে যাওয়ার ভয়ে চাষীদের বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয় না। ভাসমান বাজারে কর্মসংস্থান হয়েছে একাধিক শ্রমিকের। দূর দূরান্ত থেকে এসে কাজ করেন তারা। তাদের সাথে কথা বল্লে তারা বলেন,, বড় বাগান থেকে আমড়া পড়তে লোক লাগে। আমাদের কারও বাড়ি পিরোজপুর করাও বাড়ি আরও দূরে হলেও পেয়ারা-আমড়ার মৌসুমে ভিমরুলী, আটঘরম কুড়িআনা এলাকায় থাকি। দৈনিক মজুরিতে ফল পেড়ে দেই গাছ থেকে। এদিকে, বাজারের পাইকারী ক্রেতাদের সাথে কথা বল্লে, পেয়ারার বাজার এ বছর তুলনামূলক কমে গেছে। কিন্তু আমড়ায় চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। পরিপক্ব ভালো সাইজের আমড়ার মণ ১৪/১৫শ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে না। এত দাম দিয়ে কিনে পরিবহন খরচ দিয়ে আমরা খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করে কীভাবে লাভ করবো? আবুল কালাম নামে এক চাষী বলেন, “অন্য ফসলের তুলনায় আমড়া চাষে খরচ কম। একবার গাছ টিকে গেলে ৫/৭ বছর ধরে ভালো ফলন আসে। তখন শুধু পরিচর্যা করলেই হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর আরও সহজ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের আমড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতে।তিনি বলেন, সারাদেশেই দক্ষিণাঞ্চলের আমড়ার চাহিদা খুব বেশি। এবিষয়ে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম কাছে জানতে চাইলে বলেন , আমড়ার চাষ ঝালকাঠিতে দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ বছর জেলায় ৬০২ হেক্টর জমিতে আমড়ার আবাদ হয়েছে। আবাদি জমি থেকে ৪ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন আমড়া উৎপাদন হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ফসল হচ্ছে ঝালকাঠির আমড়া। এই জেলার ভাসমান বাজারকে ঘিরে যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার খুলেছে তাতে আমড়া চাষ ভালো ভূমিকা রাখছে। কিছুদিন আগে পেয়ারা ছিল।