ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ ও অক্সিজেন মিটার চুরির হিড়িক, গ্রেফতার ১
- আপডেট সময় : ০৫:৩৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪ ২৪ বার পড়া হয়েছে
ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃক্ষপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে হাসপাতালের কমপাউন্ডের একের পর এক চুরি ঘটনা ঘটছে। এ চুরি ঘটনা ঘটলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চুরি ডেকাতে কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। এ ঘটনায় জড়িত জাহাঙ্গীর মীর (৩০) একজনকে অক্সিজের পাইপসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের কোন দায় দায়িত্ব নেই এমনাটাই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। জনাগেছে করোনাকালীন দক্ষিণাঞ্চলে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায় সেন্টার অক্সিজেন প্লানের স্থানপন করে চিকিৎসা সেবা দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু করোনার পরে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় কোন অফিস রুমসহ কোন রুম ব্যবহার না করায় ওই চার তলায় মাদক সেবীসহ বিভিন্ন অপরাধ কান্ড চলতে থাকে চর্তথ তলায়। একারনে চর্তথতলাটি অরক্ষিত থাকায় একের পর এক অক্সিজেন পাইপ, অক্সিজেন মিটার, ফ্যান এমনকি বাথরুমের কল গুলি খুলে নিয়ে যায়। একটি চোর চক্র যাহা কর্তৃপক্ষ দীঘদিন পরে নজরে আসে। হাসাপতালে সকল সিসি ক্যামেরা চালু না থাকলে ও যে কয়টি চালু আছে তা দেখার যেন কেউ নেই। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এ অব্যবস্থায় চলছে স্বাস্থ্য সেবা। হাসপাতালে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায় গত কয়েক মাস থেকে চোরদের উৎপাত বেড়েছে। অধিকাংশ সময় এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের খোয়া যাচ্ছে টাকা, মোবাইল ফোন, ওষুধ সামগ্রীসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। বাদ যায়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ, ফ্যান ও জেনারেটরের ব্যাটারীসহ মূলবান যন্ত্রপাতি। গত ৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ চুরি করার সময় জাহাঙ্গীর মীর (৩০) নামের এক যুবকে হাতেনাতে আটক করেছে জনতা। আটকৃত জাহাঙ্গীর উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দ আঃ ছত্তারের পুত্র। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। নাইটগার্ড সোহাগ জানায়, শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে দোতালার লাইট বন্ধ দেখে আমি সেখানে যাই। যেয়ে দেখি অন্ধকারে একজন লোক সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করছে। আমি এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইবার সহ অনেকে ডেকে নিয়ে চোর কে আটক করি। এসময় তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে সেলাই রেন্জ, প্লাসসহ পাই কাটার বিভিন্ন সরঞ্জম পাওয়া যায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকে নিয়ে যান। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ একজন চোর ধরলেও চক্রের অন্য সদস্যরা রয়ে গেছে ধরাছোয়ার বাইরে। মানুষের জীবন রক্ষাকারী সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ চুরি হচ্ছে। এতে করে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে আর ওই সকল পাইপদিয়ে অক্সিজেন চালু করা যাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মচারি জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র হাসপাতাল থেকে অক্সিজেনসহ বৈদ্যুতিক পাখা, পানির কল, ইলেকট্রিকের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় জেনারেটর রুম থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা দামের একটি ব্যাটারি চুরি হয়ে যায়। এই চুরির বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এমকি সিসিটিভি ক্যামেরাও মনিটরিং করছে না। যার ফলে বেড়েছে চোর চক্রের উৎপাত। এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই দায়ী মনে করেন এলাকাবাসী । এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কামাল হোসেন বলেন, ২২ জুলাই সন্ধ্যায় জেনারেটর রুম থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা দামের একটি ব্যাটারি চুরি হয়, আমি বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় মামলা দায়ের করি। চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বর্নালী দেবনাথ জানান, আমার পক্ষে হাসপাতালে আসা সবার ব্যাগ তল্লাশি করা সম্ভব নয়। তবে ৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ চুরি করার সময় একজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ৩১শষ্যার হাসপতালের জনবল দিয়ে চলছে ১০০ শষ্যার নতুন ভবনে জনবল কিন্তু ১০০ শষ্যায় যে জনবল প্রয়োজন তা কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত বরাদ্ধা দেই নি। একারণে ৩১ শষ্যার জন বল দিয়ে ১০০ শষ্যা চালানো খুবই কষ্ট কর। এক পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দিতেও হিসিম খেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন কুমার মন্ডল জানান, চুরির ঘটনায় পূর্বে একটি মামলা ছিল। সেই মামলায় জাহাঙ্গীর মীর নামের একজনকে গ্রেফতার করে কোর্ট প্রেরন করা হয়েছে। এর সাথে যেই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।